আল্লাহ তা‘আলা হুজুরে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সর্বশেষ আসমানী কিতাব দিয়ে প্রেরণ করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রেরণের বিভিন্ন উদ্দ্যেশ্য থাকলেও মৌলিকভাবে চারটি উদ্দেশ্যের কথা কুরআন শরীফের চারটি স্থানে বিবৃত হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, هُوَالَّذِىْ بَعَثَ فِىْ الْاُمِّيِّيْنَ رَسُوْلاً مِنْهُمْ يَتْلُوْا عَلَيْهِمْ ايتِه وَيُزَكِّيْهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالحِْكْمَةَ وَاِنْ كَانُوْا مِنْ قَبْلُ لَفِىْ ضَللٍ مُّبِيْنٍ ‘তিনিই সেই
আল্লাহ তা‘আলা হুজুরে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সর্বশেষ আসমানী কিতাব দিয়ে প্রেরণ করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রেরণের বিভিন্ন উদ্দ্যেশ্য থাকলেও মৌলিকভাবে চারটি উদ্দেশ্যের কথা কুরআন শরীফের চারটি স্থানে বিবৃত হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে,
هُوَالَّذِىْ بَعَثَ فِىْ الْاُمِّيِّيْنَ رَسُوْلاً مِنْهُمْ يَتْلُوْا عَلَيْهِمْ ايتِه وَيُزَكِّيْهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالحِْكْمَةَ وَاِنْ كَانُوْا مِنْ قَبْلُ لَفِىْ ضَللٍ مُّبِيْنٍ
‘তিনিই সেই সত্তা , যিনি নিরক্ষর লোকদের মাঝে তাদের মধ্য হতে একজন রাসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদেরকে আল্লাহর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করে শুনাবেন ,আর তাদেরকে পবিত্র করবেন এবং কিতাব ও সুন্নাহ্্ শিক্ষা দিবেন। নিশ্চয় তারা ইতিপূর্বে প্রকাশ্য বিভ্রান্তিতে ছিল’।
(সূরা জুমু‘আ: ২)
উক্ত আয়াতের বর্ণনা দ্বারা স্পষ্টত:প্রমাণিত হয় যে, পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত করা, উম্মতকে শুনানো ও শিক্ষা দেওয়া রাসূল সা. এর অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব। নিজের উপর অর্পিত এ সুমহান দায়িত্বকে রাসূলে আকরাম সা. যথাযথরূপে আঞ্জাম দিয়েছেন। তিনি সাহাবায়ে কিরামকে রা. কুরআনের আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করে শুনিয়েছেন এবং এর তিলাওয়াত শিক্ষা দিয়েছেন। সাহাবায়ে কিরাম রা.কুরআন তিলাওয়াত শিখিয়েছেন তাবিয়ীনে ‘ইজামকে রহ., তাঁরা শিখিয়েছেন তাবয়ে তাবিয়ীনকে রহ.। এভাবে প্রজন্ম পরম্পরায় কুরআন তিলাওয়াত শিক্ষাদানের ধারা আজো অব্যাহত রয়েছে।
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সাহাবায়ে কিরাম রা. হতে শুরু করে আমাদের পূর্ববর্তীরা সকলেই কুরআন তিলাওয়াত শিক্ষাদানের পাশাপাশি নিজেরাও অধিক পরিমাণে কুরআন তিলাওয়াত করতেন। অনেকে রাতের পর রাত নামাযে কুরআন তিলাওয়াতে অতিবাহিত করতেন। কুরআনের প্রতি সীমাহীন ভক্তি-শ্রদ্ধা, মহব্বত ও ভালবাসা তাঁদেরকে এভাবে কুরআন তিলাওয়াতে মগ্ন থাকতে বাধ্য করত। কুরআন তিলাওয়াতে পূর্ববর্তীদের নিমগ্নতা ও কুরআন তিলাওয়াত কালে ও তিলাওয়াত শ্রবণে তাদের বিশেষ অবস্থা সৃষ্টি সম্পর্কিত অসংখ্য ঘটনা ইতিহাসের পাতায় পাতায় উল্লিখিত আছে। উপদেশ লাভের আশায় সেসব ঘটনা হতে মাত্র কয়েকটি নিম্নে উদ্ধৃত হল।
সাহাবায়ে কিরামের রা. কুরআন প্রীতি
হযরত আয়িশা রা. বর্ণনা করেন যে, হযরত আবু বকর সিদ্দীক রা. ছিলেন অত্যন্ত কোমল হৃদয়ের অধিকারী। কুরআন তিলাওয়াত কালে তিনি নিজের চক্ষুদ্বয়কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারতেন না; বরং কালামুল্লাহ তিলাওয়াত শুরু করা মাত্রই তাঁর চক্ষুদ্বয় হতে অশ্রু ধারা প্রবাহিত হয়ে যেত।
হযরত হাসান বসরী রহ. বর্ণনা করেন যে, হযরত উমর রা. কখনো কখনো কুরআন তিলাওয়াত কালে এত অধিক ক্রন্দন করতেন যে, তিনি বেহুঁশ হয়ে পড়ে যেতেন। ফলে তিনি দারুণ অসুস্থ হয়ে পড়তেন এবং কয়েকদিন পর্যন্ত ঘর থেকে বের হতে পারতেন না।
হযরত মুহাম্মদ ইবনে সীরীন রহ. বর্ণনা করেন যে, হযরত উসমান রা.রাতে একই রাক‘আতে পূর্ণ কুরআন তিলাওয়াত সম্পন্ন করতেন। অনুরূপভাবে হযরত ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল রহ. বর্ণনা করেন যে, ‘তিনি বলতেন যদি তোমাদের অন্তর পবিত্র হয়ে যায় তাহলে তোমরা কুরআন তিলাওয়াতে তৃপ্ত হতে পারবে না’।
তিনি আরো বলতেন, আমার জীবনে একটি দিনও এমন অতিবাহিত হওয়াকে আমি পসন্দ করি না,যাতে দেখে দেখে কুরআন তিলাওয়াতের সুযোগ না হয়।
হযরত আলী রা.সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তিকালের পর তিনি কুরআন তিলাওয়াতে এমন নিমগ্ন হয়ে পড়েছিলেন যে,অনেকদিন পর্যন্ত ঘর থেকে বের হননি।
খুলাফায়ে রাশিদীনের উপরোক্ত এসব সংক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়াও কুরআন তিলাওয়াতের প্রতি সাহাবায়ে কিরামের রা. সীমাহীন ইশক-মহব্বত ও তিলাওয়াতে নিমগ্নতার বহু ঘটনা তারীখ ও সীরাতের নির্ভরযোগ্য কিতাবসমূহে বর্ণিত রয়েছে।
সাহাবায়ে কিরাম রা. এর পরবর্তীদের কুরআন প্রীতি
সাহাবায়ে কিরাম রা. এর ন্যায় তাবিয়ীগণের কুরআন তিলাওয়াতের আমলও ছিল বিস্ময়কর। এ জাতীয় কয়েকটি ঘটনা নিম্নে উল্লিখিত হল।
হযরত ইকরামা রহ. যখন তিলাওয়াত করার জন্য পবিত্র কুরআন খুলতেন তখন প্রায়ই সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলতেন এবং তাঁর মুখে কেবলমাত্র উচ্চারিত হতهذا كلام ربى অর্থাৎ এটা আমার প্রতিপালকের কালাম।
হযরত হাসান বসরী রহ. সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে,একবার তিনি সারা রাত্র কেবলমাত্র وَاِنْ تَعُدُّوْا نِعْمَةَ اللهِ لاَ تُحْصُوْهَا অর্থাৎ যদি তোমরা আল্লাহ তা‘আলার নিয়ামতসমূহ গণনা করতে চাও তাহলে তা গণণা করে শেষ করতে পারবে না। (সূরাহ্ নাহ্ল: ১৮)
এ আয়াতাংশ পাঠেই রাত অতিবাহিত করেছেন।
ইমামে আ‘জম হযরত ইমাম আবু হানীফা রহ. দীর্ঘ চল্লিশ বৎসর পর্যন্ত ইশার নামাযের উযু দ্বারা ফজরের নামায আদায় করেছেন। আর রাতে নামাযে দাঁিড়য়ে কুরআন তিলাওয়াতে মগ্ন রয়েছেন। প্রায়ই রাতের নামাযে কুরআন খতম করেছেন। তবে এক রাত্রে কেবলমাত্র নিম্নোক্ত আয়াতটি তিলাওয়াতেই সুবহে সাদিক পর্যন্ত মগ্ন থাকলেন,
وَامْتَازُوْا الْيَوْمَ اَيُّهَا الْمُجْرِمُوْنَ
‘হে অপরাধীরা! আজ তোমরা পৃথক হয়ে যাও।’ (সূরাহ্ ইয়াসীন: ৫৯)
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহ. স্বৈরশাসক কর্তৃক ৮২৬ হিজরীর শা‘বান মাসে গৃহবন্দী হন। আর ৮২৮ হিজরীর জীকা‘দাহ মাসে আখিরাতের পথে যাত্রা করেন। দীর্ঘ ২৮ মাসের এ গৃহবন্দীত্বের জীবনে তিনি পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতকে জীবনের মহান ব্রত হিসাবে গ্রহণ করেন। উল্লেখ্য যে, এ অল্প সময়ের মাঝে তিনি স্বীয় সহোদর শাইখ যাইনুদ্দীন ইবনে তাইমিয়া রহ. এর সাথে পবিত্র কুরআন দাওর করেন। অর্থাৎ একে অপরকে কুরআনের তিলাওয়াত শুনিয়ে সম্পন্ন করেন। এরপর ৮৭তম দাওর শুরু করে যখন ২৭তম পারার ‘সূরাহ্ ক্বামার’ এর শেষ দু’টি আয়াত,
اِنَّ الْمُتَّقِيْنَ فِىْ جَنّتٍ وَّنهَرٍ فِىْ مَقْعَدِ صِدْقٍ عِنْدَ مَلِيْكٍ مُقتَدِرٍ
‘নিশ্চয় মুত্তাক্বীগণ সর্বশক্তিমান বাদশাহর নিকট বাগান ও নহরসমূহে সুউচ্চআসনে আসীন থাকবে।’ (সূরাহ্ ক্বামার: ৫৪-৫৫)
তিলাওয়াত করলেন, তখনই মহান প্রভুর পরম সান্নিধ্যে গমন করেন।
ঐতিহ্যবাহী দারুল উলূম দেওবন্দ এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হুজ্জাতুল ইসলাম আল্লামা কাসিম নানুতবী রহ. কুরআন তিলাওয়াতে খুবই আগ্রহী ছিলেন। প্রতি রাতে নফল নামাযে তিনি কুরআন খতম করতেন। দারুল উলূম দেওবন্দ এর সাত্তা মসজিদের হুজরাটিই ছিল হজরতের বিশ্রামস্থল। প্রতিদিন ইশার নামাযের পর মুসল্লীরা চলে গেলে হযরত মসজিদের গেট বন্ধ করে দিয়ে ইবাদতে মগ্ন হতেন। ইশার পর হযরতের আমল কেমন হয়ে থাকে তা নিজ চোখে দেখার পরম আগ্রহে তৎকালীন দারুল উলূম দেওবন্দ এর এক ছাত্র ইশার নামাযের পর মসজিদের এক কোণে চাটাইয়ের আড়ালে লুকিয়ে থাকে। নামাযের পর যখন হযরত নানুতবী রহ. মসজিদে কাউকে দেখতে পেলেন না, তখন যথারীতি গেইট বন্ধ করে নফল নামাযে কুরআন তিলাওয়াত শুরু করলেন। এদিকে সেই ছাত্রও এসে তখন হযরতের সাথে নামাযে শরীক হল। হযরত নানুতবী রহ. কুরআন তিলাওয়াত করেই যাচ্ছেন, আর রাতও গভীর হতে চলছে। হযরত যখন পবিত্র কুরআনের সতরতম পারার তিলাওয়াত শুরু করলেন অথচ তখনও প্রথম রাক‘আতের রুকুই হয়নি, এমতাবস্থায় ঘুমের তাড়নায় টিকতে না পেরে সেই ছাত্র নামায ছেড়ে চলে এল। অথচ হযরত নানুতবী রহ. স্বাভাবিক গতিতেই তিলাওয়াত করে যাচ্ছিলেন।
হযরত মাওলানা আশিকে ইলাহী মীরাঠী রহ. বর্ণনা করেন যে, কুতুবে আলম হযরত মাওলানা রশীদ আহমাদ গাঙ্গুহী রহ. একবার তারাবীহ্র নামায পড়াচ্ছিলেন। সেই তারাবীহ্র জামাতে আমারও অংশ গ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছিল। আজাব সম্পর্কিত একটি রুকু তিলাওয়াত কালে হযরতের তিলাওয়াতের স্বর এমন ছিল যে, মুসল্লীদের অধিকাংশের আরবী ভাষা জ্ঞান না থাকা সত্ত্বেও কেবল হযরতের মধুমাখা সুরেলা তিলাওয়াত শুনেই সকলে ঢুকরে কাঁদছিলেন এবং নিজেদের অবচেতনে কাঁপছিলেনও।
হযরত মাওলানা ফজলুর রহমান গাঞ্জে মুরাদাবাদী রহ. একবার স্বীয় শাগরিদ মাওলানা তাজাম্মুল হোসাইন রহ. কে লক্ষ্য করে বললেন যে, কুরআন তিলাওয়াতে আমি যে তৃপ্তি অনুভব করি, যদি তোমরা এর কিঞ্চিত পরিমাণও উপলব্ধি করতে তাহলে আমার মত স্থির থাকতে পারতে না। বরং সবকিছু ছেড়ে জঙ্গলে চলে যেতে।
হযরত মাওলানা আব্দুর রহীম রায়পুরী রহ.সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, তিনি তাহাজ্জুদের নামাযে কুরআন তিলাওয়াত কালে কাঁদতে থাকতেন। আজাবের আয়াত তিলাওয়াত কালে কেঁদে কেঁদে ইস্তিগফার করতেন। এরপর তিলাওয়াত করতে করতে যখন আল্লাহ পাকের রহমত এর আয়াত এসে পড়ত তখন তা তিলাওয়াত করে আনন্দ অনুভব করতেন। আবার কখনো এমন অবস্থা সৃষ্টি হত যে, একেবারে নিশ্চুপ হয়ে যেতেন।
কুরআন শ্রবণ সম্পর্কিত ঘটনা
খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত উমর ফারুক রা. একদিন ফজরের নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হয়ে রাস্তায় বেহুঁশ হয়ে পড়ে গেলেন। জ্ঞান ফেরার পর তাঁকে এর কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানালেন, যাত্রাপথে এক বাড়ী হতে ক্বিয়ামতের ভয়াবহতার বর্ণনা সম্বলিত একটি আয়াতের তিলাওয়াত শুনে আমি বেহুঁশ হয়ে পড়েছিলাম।
মক্কার মুশরিকদের নির্মম নির্যাতনে অতীষ্ঠ হয়ে কিছু সংখ্যক মুসলমান রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশক্রমে আবিসিনিয়ায় হিজরত করেন। এদিকে হিজরতকারী মুসলমানদেরকে ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে মুশরিকরা আবিসিনিয়ার বাদশাহর জন্য বহু উপঢৌকনসহ একটি প্রতিনিধিদল সেখানে প্রেরণ করে। তাদের অভিযোগ শুনে বাদশাহ হিজরতকারী মুসলমানদেরকে শাহী দরবারে তলব করলেন। বাদশাহ বিভিন্ন বিষয়ে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন। আর হজরত জা‘ফর রা.তাঁর প্রশ্নগুলোর উত্তর দিলেন। এরই মাঝে বাদশাহ তাদের নিকট হজরত মারয়াম আ. ও হজরত ঈসা আ. সম্পর্কে জানতে চাইলে হযরত জা‘ফর বিন আবি তালিব রা. সূরাহ্ মারয়াম তিলাওয়াত শুরু করলেন। আর বাদশাহ নাজ্জাশী মন্ত্রমুেগ্ধর ন্যায় নিবিষ্টচিত্তে তাঁর তিলাওয়াত শ্রবণ করতে থাকলেন। একপর্যায়ে দেখা গেল বাদশাহর চোখের অশ্রুতে তার দাঁড়ি ভিজে গেছে। হযরত জা‘ফর রা. এর তিলাওয়াত শেষ হলে বদশাহ তাকে সম্বোধন করে বললেন,তোমাদের নবী যে কুরআন নিয়ে এসেছেন এবং আমাদের নবী যে আসমানী কিতাব নিয়ে এসেছেন উভয়টির উৎস এক ও অভিন্ন। এরপর তিনি কুরাইশ প্রতিনিধি দলকে নিরাশ করে ফিরিয়ে দিলেন এবং মুসলমানদেরকে তার রাজ্যে নির্ভয়ে থাকার অনুমতি দিয়ে দিলেন।
প্রখ্যাত বুযুর্গ হযরত ফুজাইল রহ.প্রাথমিক জীবনে ছিলেন এক দুর্ধর্ষ ডাকাত। একবার ডাকাতির উদ্দেশ্যে বের হয়ে এক কাফেলার উপর আক্রমণ করলেন। কাফেলার লোকদের মধ্য হতে একজন পবিত্র কুরআনের নিম্নােক্ত আয়াতটি তিলাওয়াত করলেন। اَلَمْ يَأْنِ لِلَّذِيْنَ امَنُوْا اَنْ تَخْشَعَ قُلُوْبُهُمْ لِذِكْرِاللهِ ‘ঈমানদারদের জন্য কি সময় আসেনি যে, তাদের অন্তর আল্লাহর যিকরে প্রকম্পিত হবে?’ (সূরাহ হাদীদ: ১৬)
পবিত্র কুরআনের এ আয়াত শ্রবণ করার সঙ্গে সঙ্গেই তার অন্তরে এক অভাবনীয় শিহরণ সৃষ্টি হল। তার জীবনে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা হল। তিনি খালেস তাওবাহ্ করে আল্লাহর ধ্যানে মগ্ন হলেন এবং আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্যভাজন বান্দা হিসেবে জগতে পরিচিতি লাভ করলেন। কুরআন শ্রবণে ক্রন্দন করা, অন্তর বিগলিত হওয়া ও জীবনে পরিবর্তন সাধিত হওয়া বিষয়ক বহু ঘটনা কিতাবসমূহে বর্ণিত রয়েছে। তবে উপদেশ লাভের জন্য এ কয়েকটি ঘটনাই যথেষ্ট।
মতামত দিন
আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না. প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলো * দ্বারা চিহ্নিত করা আছে।