তাফসীর এর আভিধানিক ও পারিভাষিক অর্থ আভিধানিক অর্থ تفسير শব্দটিفَسْر মূলধাতু হতে উদগত। باب تفعيل এর মাসদার (فسّر يفسّر تفسيرًا) হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। যার অর্থ- স্পষ্ট করা, প্রকাশ করা, বিশ্লেষণ করা ও ব্যাখ্যা করা। যেমন ইরশাদ হয়েছে:ولايأتونك بمثل الاجئنك بالحق واحسن تفسيرا অর্থ: “তারা তোমার নিকট যে প্রশ্নই নিয়ে আসে আমি তোমাকে তার সঠিক সমাধান
তাফসীর এর আভিধানিক ও পারিভাষিক অর্থ
আভিধানিক অর্থ
تفسير শব্দটিفَسْر মূলধাতু হতে উদগত। باب تفعيل এর মাসদার (فسّر يفسّر تفسيرًا) হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। যার অর্থ- স্পষ্ট করা, প্রকাশ করা, বিশ্লেষণ করা ও ব্যাখ্যা করা।
যেমন ইরশাদ হয়েছে:ولايأتونك بمثل الاجئنك بالحق واحسن تفسيرا
অর্থ: “তারা তোমার নিকট যে প্রশ্নই নিয়ে আসে আমি তোমাকে তার সঠিক সমাধান ও সুন্দর ব্যাখ্যা দান করি।”
(সূরাহ্ ফুরক্বান-৩৩)
এছাড়া فَسْر শব্দটি باب نصر (فَسَرَ يَفْسُرُ فَسْرًا) ও باب ضرب (فَسَرَيفْسِرُ فَسْرًا) হতেও উল্লিখিত অর্থে ব্যবহৃত হয়।
পারিভাষিক অর্থ
মুফাসসিরীনে কিরাম তাফসীর শব্দের পারিভাষিক বিভিন্ন অর্থ বর্ণনা করেছেন, সেগুলোর মধ্য হতে উল্লেখযোগ্য তিনটি নিম্নরূপ:
১. প্রখ্যাত মুফাসসিরে কুরআন ও আরবী ব্যাকরণবিদ হযরত আবু হায়্যান রহ. তাঁর কৃত তাফসীর গ্রন্থ ‘তাফসীরে বাহরুল মুহীত’ এ লিখেছেন:
هوعلم يبحث فيه عن كيفية النطق بالفاظ القران، ومدلولاتها، واحكامها الإفرادية، والتركيبية، ومعانيها التى تُحْمَلُ عليها حالة التركيب وتتمات لذلك.
অর্থাৎ“ তাফসীর হল এমন শাস্ত্র, যাতে কুরআনে কারীমের শব্দাবলীর উচ্চারণ পদ্ধতি, শব্দাবলীর অর্থ, শব্দাবলীর মিলিত ও পৃথক অবস্থার হুকুমসমূহ, সংযুক্ত অবস্থায় বাক্যের অর্থ ও তার পরিপূরক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।”
পর্যালোচনা: উল্লিখিত সংজ্ঞার আলোকে তাফসীর শব্দের মাঝে নি¤েœাক্ত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত হয়।
১. عن كيفية النطق بالفاظ القران এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে علم القراءات । কারণ, এ শাস্ত্রে আরবী একক শব্দের উচ্চারণ পদ্ধতিসমূহ নিয়ে আলোকপাত করা হয়।
২.ومدلولاتها এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে علم اللغة। কারণ, এর মাধ্যমে আরবী একক শব্দগুলোর অর্থ জানা যায়।
৩. وأحكامها الإفرادية এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে علم الإشتقاق
و علم الصر । কারণ, এর মাধ্যমে আরবী একক শব্দসমূহের মূলধাতু , মূলধাতু হতে বিভিন্ন শব্দের রূপান্তর পদ্ধতি এবং রূপান্তরিত অবস্থায় শব্দসমূহের অর্থ ও বৈশিষ্ট্য জানা যায়।
৪. (وأحكامها) التركيبية এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছেعلم النحو وعلم المعانى। কারণ, علم النحو এর মাধ্যমে আরবী একক শব্দসমূহ মিলিত অবস্থার অর্থ, শব্দসমূহের শেষের অবস্থার পরিবর্তনরীতি ও এসবের কারণ জানা যায়। অনুরূপভাবে علم المعانى এর মাধ্যমে বাক্যের যথার্থ প্রয়োগরীতি ও সে অনুপাতে তার অর্থ অবগত হওয়া যায়।
৫.ومعانيها التى تحمل عليها حالة التركيب এর দ্বারা উল্লিখিত علم এর সাথে সাথে علم الادب ، علم البلاغة، علم الحديث، علم أصول الفقه ইত্যাদি উদ্দেশ্য হয়ে থাকে।
৭.وتتمات لذلك এর দ্বারা علم أسباب النزول، علم الناسخ والمنسوخ এবং تفصيل الإجمال ইত্যাদি উদ্দেশ্য হয়ে থাকে।
২.আল্লামা বদরুদ্দীন যারকাশী রহ. তার রচিত কিতাব আল-বুরহান ফী উলূমিল কুরআনে ইলমে তাফসীরের সজ্ঞা নি¤েœাক্তভাবে ব্যক্ত করেছেন :
التفسير: “علم يفهم به كتاب الله المنزل على نبيه محمد صلى الله عليه وسلم وإستخراج أحكامه وحكمه”
অর্থাৎ “তাফসীর হল এমন শাস্ত্র যার দ্বারা নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর নাযিলকৃত কিতাবে বর্ণিত আয়াতসমূহের অর্থ বুঝা যায়
এবং সেগুলো হতে আহকাম বের করার পদ্ধতি ও হিকমাত অনুধাবন করা
যায়।”
৩.শায়খ মুহাম্মদ আবদুল আযীম আয-যারক্বানী রহ. তাফসীর শাস্ত্রের আরো কিছুটা ব্যতিক্রমী সঙ্গা বর্ণনা করেছেন।
“هوعلم يبحث فيه عن أحوال القران المجيد من حيث دلالته على مراد الله تعالى بقدر الطاقة البشرية”
অর্থাৎ“ তাফসীর এমন শাস্ত্র যার মাঝে মানুষের সামর্থ অনুযায়ী কুরআনের আয়াত দ্বারা আল্লাহ তা‘আলার উদ্দেশ্য বুঝাতে কুরআনে কারীমের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।”
মতামত দিন
আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না. প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলো * দ্বারা চিহ্নিত করা আছে।